ফেলুদা স্মরণে যারা শিরোনাম দেখে সত্যজিৎ রায়ের অমর সৃষ্টি ফেলু মিত্তিরের কথা ধরে নিয়েছন তারা যে ভীষণভাবে হতাশ হবেন তা বলাই বাহুল্য । তাই আগে ভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আমার নিকটতম প্রতিবেশীর ঘর তালা বন্ধ । বেশ কিছুদিন হয়ে গেল কোন খবর নেই । মাঝে একদিন স্ত্রীর মুখে খবর পেলাম - কোলকাতায় ছেলের কাছে থেকে ফেলুকে ডাক্তার দেখানো হবে । তার কয়েকদিন পরই ফেসবুক মারফত জানা গেল ফেলু মায়ার বন্ধন ছিন্ন করে ইহলোক ত্যাগ করেছে । গৃহকর্তী গৃহস্বামী ছাড়াও বহু আত্মীয় বন্ধু তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন । আমরাও শোক ও প্রার্থনা ব্যক্ত করে নিজেদের মধ্যে ফেলুকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করে চলেছি । ফেলুর শান্ত স্বভাব , বুদ্ধিদীপ্ত চোখ ও অসীম ধৈর্যের পরিচয় নানাভাব পেয়েছি । যেমন ধরুণ ওদের ড্রয়িং রুমের আড্ডায় শব্দ তরঙ্গ হঠাৎ বে ড়ে গেল । ফেলু পাশের ঘর থেকে এসে একবার পর্যবেক্ষণ করে চলে গেল । আড্ডা হয়তো থামছেই না । রাত বে ড়ে যাচ্ছে ।আর একবার এসে উঁকি মেরে চলে গেল । আড্ডা শেষে খাওয়া দাওয়া শেষ হতে না হতেই ফেলু করিডোরে। ঘুরতে থাকে । মাঝে মাঝে এসে দরজার সামনে...
উনবিংশ শতকের মনীষীদের মধ্যে স্বামী বিবেকান্দ ও রবীন্দ্রনাথ গৌতম বুদ্ধের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন । বৌদ্ধ ধর্ম ভারতে প্রায় বিলুপ্ত হলেও বুদ্ধদেব কিন্তু হিন্দু অবতার বরিষ্ঠদের একজন । তাঁর জীবন ও বাণী সর্ব যুগের আদর্শ হতে পারে । সেই মহতী বাণী সমগ্রের সারমর্ম বিধৃত আছে চারটি শব্দের মধ্যে : মৈত্রী , করুণা, মুদিতা ও উপেক্ষা । প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় এই চারটি গুণ অনুসৃত হলে মানুষ তার ক্ষুদ্র সত্তা অতিক্রম করে মহাত্ম্যা হবে , পুনর্জন্মের দুর্ভোগ ভুগতে হবে না ।ব্যাপারটা একটু বিশদ করি । আমরা সাধারণ মানুষরা আলাদা আলাদা সংসার পেতে সুখের সন্ধানে মেতে উঠি । এটা চাই , ওটা চাই - চাওয়ার শেষ নেই ! এই যে সর্বগ্রাসী অভিলাষ , এটাই সকল দু:খের মূল । তাই বুদ্ধ বললেন ," কামনা উপেক্ষা কর । হৃদয়ে সদা বহমান হোক মৈত্রী ও করুণা ধারা । সকলকে আপন কর । শুধু মানুষ নয় , মনুষ্যেতর প্রাণীকুলকেও আপন কর । এই অবাধ সেবা ধর্মের আচরণের ফলে মানুষ মহামানব হবে যা দেবত্ব প্রাপ্তির চেয়েও বড ।সেই অবস্থায় এক অনির্বচনীয় প্রশান্তিতে তার মুখমণ্ডল শোভিত হবে । এরই নাম মুদিতা । এই অপার্থিব রূপই পরিলক্ষিত হয়...