আজকাল প্রায়শ:ই ইউথানেজিয়া শব্দটা আমাদের কানে আসে বা চোখে পডে । প্রায়
সবাই আমরা জানি যে শব্দটার অর্থ ব্যথাবিহীন বন্ধুপ্রতিম মৃত্যু । বহু রোগী
দীর্ঘ দিন ধ'রে হয়তঅসহ্য কষ্ট ভোগ করছেন । কেউ হয়ত গভীর কোমায় আচ্ছন্ন
হয়ে আছেন । এতে রোগীর নিজেরও কষ্ট ,তার আত্মীয় স্বজনদেরও কষ্ট । এর চেয়ে
মৃত্যু উভয় পক্ষের কাছেই স্বস্তিদায়ক । কিন্তু সে মৃত্যু কেমন মৃত্যু ?
আত্মহত্যা আইন বিরুদ্ধ এবং অনভিপ্রেত । ওষুধ খাইয়ে বা বল প্রয়োগ ক'রে
মেরে ফেলা শুধু আইন বিরুদ্ধ নয় , ভয়ংকরভাবে অমানবিক । তাহলে রইল বাকি
ইউথানেজিয়া । এতে ডাক্তারের সাহায্য লাগে - ওষুধের গুণে শুয়ে শুয়ে বা
ব'সে ব'সে আরামের সঙ্গে ঘুমে ঢ'লে পডা যায় ।
এ ধরণের চিকিৎসার ভাবনা যেহেতু অতীতে ছিল না , তাই বোঝাই যাচ্ছে শব্দটা নতুন তৈরি হয়েছে । দেখা যাক এর কয়েনিং কম্বিনেশনটা কেমন। গ্রিক প্রেফিক্স " eu " এর অর্থ : good /well বা pleasant - আর গ্রিক thanatos মানে মৃত্যু। এই দুয়ে মিলে euthanasia! তবে ইউথানেজিয়া চিকিৎসা পদ্ধতি কিন্তু এখনও পর্যন্ত সর্বত্র আইনসিদ্ধ নয় । গোটা পৃথিবী জুডে বিতর্ক চলছে । ঐক্যমত না হলেও শোনা যাচ্ছে কোন কোন দেশ চালু করার মুখে প্রায় । হয়ত অদূর ভবিষ্যতে সব দেশেই এই পদ্ধতি অনুসৃত হবে ।
আমরা লক্ষ্য করলাম - এই গ্রিক প্রেফিক্সটার মধ্যে কেমন যেন একটা magical প্রভাব আছে যার ফলে মৃত্যুর মতো ভয়ংকরতম ব্যাপারও " তুহু মোর শ্যাম সমান " হয়ে উঠতে পারে । এই মজার কথাটা মাথায় রেখে শব্দের কারিগররা বেশ কিছু নতুন শব্দ সৃষ্টি করেছেন । তার মধ্যে একটির নাম - Euphemism: eu +pheme+ ism প্রথম ও শেষ অংশের মানে তো আমরা জানি । মাঝের pheme - এর অর্থ speech বা talks. এটা একটা বাচনভঙ্গি - এর মাধ্যমে অপ্রিয় সত্য বা কঠিন বাস্তবকে সরাসরি চাঁচাছোলা ভাষায় প্রকাশ না ক'রে ঘুরিয়ে বা ড্রেসিং ক'রে বলা হয় । যেমন ধরুন মারা গেছে -died না বলে বলা হল -passed away বা breathed his / her last.আমরা বাংলায় অনেকে বলি --পরলোক গমন করেছেন বা স্বর্গারোহন করেছেন ।
অনেকটা এই ধরণের ঘুরিয়ে কথা অভ্যাস ছিল এক ভদ্রমহিলার যার মধ্যে রয়ে গিয়েছিল ভিক্টোরিয়া যুগের prudishness বা অত্যধিক শালীনতার ভাণ। ঠ্যাং কে leg বলতে তার লজ্জা। তিনি বলেন lower limb- পশ্চাদ্দেশকে buttock না বলে উনি বলেন derrière বা rear end ! Water closet বা পায়খানাকে গা বাঁচিয়ে বলেন powder room বা wash room ! ভদ্রমহিলার ব্যবহৃত আরো অনেক মজার মজার euphemistic শব্দ থাকলেও লেখা সংক্ষেপ করার তাগিদে "cut" করতে হল । একটা ছোট্ট গল্প দিয়ে সমাপ্তি টানছি : একদিন একটি ছেলে এসে তাকে জিজ্ঞেস করল , " আন্টি, আংকল কোথায় ?'
ভদ্রলোক মারা গেছেন - এই কথাটা সোজা সাপটা না বলে ভদ্রমহিলা করুণ কণ্ঠে বললেন- My boy, your uncle has taken the big bus to uptown "!
এখানে uptown মানে বুঝতে হবে উর্ধ্বলোকের কোন নগরী যেখান থেকে আমরা পৃথিবীতে আসি অর্থাৎ স্বর্গলোক !
শব্দের মন মাতানো ইতিহাস : calligraphy ,cacography ও cacophony
" আজ বিকেলের ডাকে তোমার চিঠি পেলাম "-এই গানটি যখন গাওয়া হয়েছিল তখন সত্যি সত্যিই প্রিয়জনের উষ্ণ বার্তা নিয়মিত ডাক-পিওন মারফত চিঠিপত্র ঘরে ঘরে বিলি হ'ত । তার পরেও আনুমানিক দেড দুই দশক চিঠি আসার ধারা অব্যাহত ছিল । এই জনপ্রিয় গানটা এখনও গাওয়া হয় কিন্তু প্রিয়জনের চিঠি আর ডাকে আসে না । যা সরাসরি কানে আসে তা হল ফোন বা মেসেজ । তাতে সেই অনির্বচনীয় স্বাদ ও গন্ধ থাকে কি ?
আমরা আবার ফিরে আসি চিঠির প্রসঙ্গে । চিঠির বাহ্যিক রূপ অনেকটা মানুষের মুখের মতো । সুন্দর মুখের যেমন সর্বত্র জয় , তেমনি ভাল হাতের লেখাও মানুষের মন জয় করে সহজেই । সুন্দর হস্তাক্ষরের ইংরেজি নাম calligraphy- কথাটা এসেছে গ্রিক শব্দ callos ও graffein থেকে । প্রথমাংশের অর্থ সুন্দর । দ্বিতীয়ার্ধের মানে লেখা । ক্যালিগ্রাফির সবচেয়ে সুন্দর নমুনা ছডিয়ে আছে প্রাচীন পুঁথিতে । মুদ্রণযন্ত্র উদ্ভাবনের আগের জমানার কথা । তখন স্পেশালিস্ট হস্তাক্ষর শিল্পী কপি করার কাজটা করত নিপুণভাবে । অনেক পুরোনো মন্দির , মসজিদ বা স্থাপত্যকীর্তির গায়েও ক্যালিগ্রাফির শিল্প সুষমার নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের প্রজন্ম পর্যন্ত পাবলিক পরীক্ষা পাশের সার্টিফিকেটগুলো ক্যালিগ্রাফির সৌন্দর্য ধরে রেখেছে । পরের প্রজন্মের কম্পিউটারাইজড্ সার্টিফিকেটগুলো দেখলে মন খারাপ হয় যায় ।
আমরা শুরু করেছিলাম ক্যালিগ্রাফি দিয়ে । ওটা চাঁদের উজ্জ্বল দিক ।
উল্টো পিঠটা একবার দেখবেন না-বাজে বা দুর্বোধ্য হাতের লেখা সম্পর্কে গ্রিকরা কী শব্দ ব্যবহার করত ! শব্দটা হচ্ছে cacography এর মূল kakos ও graphein. ওরকমই আর একটা শব্দ হচ্ছে cacophony- অর্থ -শ্রুতিকটু শব্দ । এই শব্দটার মূল -kakos ও phone - এবার প্রথমাংশের দিকে একবার ভাল করে চেয়ে দেখুন তো - ওর মধ্যে কর্কশ শব্দটার আদল খুঁজে পান কি না ! মনে রাখতে হবে সাহেবরা রেফের উচ্চারণ করবে না ।
যারা কবিতায় অন্ত্য মিল দেওয়ার জন্য শব্দ সন্ধান করেন তারা একবার দেখুন তো " ক্যাকোফনির " সঙ্গে "কেকাধ্বনি " চলে কি না ! শব্দদুটোর অর্থ , চেহারা ও ধ্বনি সাদৃশ্য কিন্তু নজর না কেডে পারে না !
এ ধরণের চিকিৎসার ভাবনা যেহেতু অতীতে ছিল না , তাই বোঝাই যাচ্ছে শব্দটা নতুন তৈরি হয়েছে । দেখা যাক এর কয়েনিং কম্বিনেশনটা কেমন। গ্রিক প্রেফিক্স " eu " এর অর্থ : good /well বা pleasant - আর গ্রিক thanatos মানে মৃত্যু। এই দুয়ে মিলে euthanasia! তবে ইউথানেজিয়া চিকিৎসা পদ্ধতি কিন্তু এখনও পর্যন্ত সর্বত্র আইনসিদ্ধ নয় । গোটা পৃথিবী জুডে বিতর্ক চলছে । ঐক্যমত না হলেও শোনা যাচ্ছে কোন কোন দেশ চালু করার মুখে প্রায় । হয়ত অদূর ভবিষ্যতে সব দেশেই এই পদ্ধতি অনুসৃত হবে ।
আমরা লক্ষ্য করলাম - এই গ্রিক প্রেফিক্সটার মধ্যে কেমন যেন একটা magical প্রভাব আছে যার ফলে মৃত্যুর মতো ভয়ংকরতম ব্যাপারও " তুহু মোর শ্যাম সমান " হয়ে উঠতে পারে । এই মজার কথাটা মাথায় রেখে শব্দের কারিগররা বেশ কিছু নতুন শব্দ সৃষ্টি করেছেন । তার মধ্যে একটির নাম - Euphemism: eu +pheme+ ism প্রথম ও শেষ অংশের মানে তো আমরা জানি । মাঝের pheme - এর অর্থ speech বা talks. এটা একটা বাচনভঙ্গি - এর মাধ্যমে অপ্রিয় সত্য বা কঠিন বাস্তবকে সরাসরি চাঁচাছোলা ভাষায় প্রকাশ না ক'রে ঘুরিয়ে বা ড্রেসিং ক'রে বলা হয় । যেমন ধরুন মারা গেছে -died না বলে বলা হল -passed away বা breathed his / her last.আমরা বাংলায় অনেকে বলি --পরলোক গমন করেছেন বা স্বর্গারোহন করেছেন ।
অনেকটা এই ধরণের ঘুরিয়ে কথা অভ্যাস ছিল এক ভদ্রমহিলার যার মধ্যে রয়ে গিয়েছিল ভিক্টোরিয়া যুগের prudishness বা অত্যধিক শালীনতার ভাণ। ঠ্যাং কে leg বলতে তার লজ্জা। তিনি বলেন lower limb- পশ্চাদ্দেশকে buttock না বলে উনি বলেন derrière বা rear end ! Water closet বা পায়খানাকে গা বাঁচিয়ে বলেন powder room বা wash room ! ভদ্রমহিলার ব্যবহৃত আরো অনেক মজার মজার euphemistic শব্দ থাকলেও লেখা সংক্ষেপ করার তাগিদে "cut" করতে হল । একটা ছোট্ট গল্প দিয়ে সমাপ্তি টানছি : একদিন একটি ছেলে এসে তাকে জিজ্ঞেস করল , " আন্টি, আংকল কোথায় ?'
ভদ্রলোক মারা গেছেন - এই কথাটা সোজা সাপটা না বলে ভদ্রমহিলা করুণ কণ্ঠে বললেন- My boy, your uncle has taken the big bus to uptown "!
এখানে uptown মানে বুঝতে হবে উর্ধ্বলোকের কোন নগরী যেখান থেকে আমরা পৃথিবীতে আসি অর্থাৎ স্বর্গলোক !
শব্দের মন মাতানো ইতিহাস : calligraphy ,cacography ও cacophony
" আজ বিকেলের ডাকে তোমার চিঠি পেলাম "-এই গানটি যখন গাওয়া হয়েছিল তখন সত্যি সত্যিই প্রিয়জনের উষ্ণ বার্তা নিয়মিত ডাক-পিওন মারফত চিঠিপত্র ঘরে ঘরে বিলি হ'ত । তার পরেও আনুমানিক দেড দুই দশক চিঠি আসার ধারা অব্যাহত ছিল । এই জনপ্রিয় গানটা এখনও গাওয়া হয় কিন্তু প্রিয়জনের চিঠি আর ডাকে আসে না । যা সরাসরি কানে আসে তা হল ফোন বা মেসেজ । তাতে সেই অনির্বচনীয় স্বাদ ও গন্ধ থাকে কি ?
আমরা আবার ফিরে আসি চিঠির প্রসঙ্গে । চিঠির বাহ্যিক রূপ অনেকটা মানুষের মুখের মতো । সুন্দর মুখের যেমন সর্বত্র জয় , তেমনি ভাল হাতের লেখাও মানুষের মন জয় করে সহজেই । সুন্দর হস্তাক্ষরের ইংরেজি নাম calligraphy- কথাটা এসেছে গ্রিক শব্দ callos ও graffein থেকে । প্রথমাংশের অর্থ সুন্দর । দ্বিতীয়ার্ধের মানে লেখা । ক্যালিগ্রাফির সবচেয়ে সুন্দর নমুনা ছডিয়ে আছে প্রাচীন পুঁথিতে । মুদ্রণযন্ত্র উদ্ভাবনের আগের জমানার কথা । তখন স্পেশালিস্ট হস্তাক্ষর শিল্পী কপি করার কাজটা করত নিপুণভাবে । অনেক পুরোনো মন্দির , মসজিদ বা স্থাপত্যকীর্তির গায়েও ক্যালিগ্রাফির শিল্প সুষমার নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের প্রজন্ম পর্যন্ত পাবলিক পরীক্ষা পাশের সার্টিফিকেটগুলো ক্যালিগ্রাফির সৌন্দর্য ধরে রেখেছে । পরের প্রজন্মের কম্পিউটারাইজড্ সার্টিফিকেটগুলো দেখলে মন খারাপ হয় যায় ।
আমরা শুরু করেছিলাম ক্যালিগ্রাফি দিয়ে । ওটা চাঁদের উজ্জ্বল দিক ।
উল্টো পিঠটা একবার দেখবেন না-বাজে বা দুর্বোধ্য হাতের লেখা সম্পর্কে গ্রিকরা কী শব্দ ব্যবহার করত ! শব্দটা হচ্ছে cacography এর মূল kakos ও graphein. ওরকমই আর একটা শব্দ হচ্ছে cacophony- অর্থ -শ্রুতিকটু শব্দ । এই শব্দটার মূল -kakos ও phone - এবার প্রথমাংশের দিকে একবার ভাল করে চেয়ে দেখুন তো - ওর মধ্যে কর্কশ শব্দটার আদল খুঁজে পান কি না ! মনে রাখতে হবে সাহেবরা রেফের উচ্চারণ করবে না ।
যারা কবিতায় অন্ত্য মিল দেওয়ার জন্য শব্দ সন্ধান করেন তারা একবার দেখুন তো " ক্যাকোফনির " সঙ্গে "কেকাধ্বনি " চলে কি না ! শব্দদুটোর অর্থ , চেহারা ও ধ্বনি সাদৃশ্য কিন্তু নজর না কেডে পারে না !
Comments
Post a Comment