Achelles' heel -এই ইডিয়ামের অর্থ: কারুর শারীরিক বা চারিত্রিক দুর্বলতার
জায়গা ।একিলিস ছিলেন অন্যতম প্রধান গ্রিক বীরদের মধ্যে একজন । কিন্তু তার
পায়ের গোডালি ছিল খুব দুর্বল । কেন দুর্বল তা জানতে হলে দুর্যোধনের কাহিনি
উঠবেই । কুরু-পাণ্ডবের যুদ্ধ যখন দ্রুত ভয়ংকর পরিণতির দিকে
এগুচ্ছে-শতপুত্রের মধ্যে অনেকেই নিহত , তখন গান্ধারী প্রিয় পুত্র
দুর্যোধনকে অন্তত বাঁচিয়ে রাখার উপায় ভাবলেন । তিনি পুত্রকে বললেন গোপনে
স্নান সেরে নিরাভরণ নিরাবরন দেহে তাঁর সামনে হাজির হতে । গান্ধারী মনে মনে
ঠিকক করেছেন তাঁর সাধনা- লব্ধ শক্তি দিয়ে দুর্যোধনের শরীর দুর্ভেদ্য করে
দেবেন । শুধু তো একবার চোখ খুলে তাকানোর অপেক্ষা!তাঁর মনের কথা টের পেয়ে
শ্রীকৃষ্ণ এক ফাঁকে দুর্যোধনের কানে মন্তর দিলেন: যুবাপুরুষ তুমি ,মায়ের
সামনে উলঙ্গ হয়ে দাঁডাবে? লজ্জার মাথা খেয়েছ ?
দুর্যোধন তখন একখণ্ড লজ্জানিবারনী বস্ত্র নিম্নাঙ্গে জডিয়ে মায়ের সামনে এল । মা চোখের বাঁধন খুলে তাকানো মাত্র বস্ত্রাবৃত জায়গাটুকু ছাডা দুর্যোধনের বাকি শরীর লৌহ- কঠিন হয়ে গেল । কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে । পরের ঘটনা আমাদের সবার জানা । গদা যুদ্ধে ভীমের চেয়ে বেশি দক্ষতার অধিকারী হয়েও সে পরাজিত হল । কারণ যুদ্ধটা হয়েছিল নিয়ম অমান্য করে , শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে ।
একিলিসের ক্ষেত্রেও তার মা পুত্রকে অজেয় করার জন্য তাকে নিয়ে গেলেন পাতালপুরীতে । সেখানে বয়ে চলেছে Styx নদী ।ঐ নদীর জল নাকি পূত পবিত্র। তাতে অবগাহন করালে শত্রুপক্ষের কোন অস্ত্র জাতককে ঘায়েল করতে পারবে না । মা দুহাতে ছেলের গোডালি শক্ত করে ধরে নদীর জলে নিমজ্জিত করে উঠিয়ে আনলেন ।একিলিসের শরীর দুর্ভেদ্য হল বটে ,কিন্তু মাতৃদেবী যে অংশটুকু চেপে ধরেছিলেন সেই অংশ বাদে !
এবারে হেলেনের অপহরণকে কেন্দ্র করে গ্রিক আর ট্রোজানদের মধ্যে যুদ্ধের আয়োজন সম্পূণ। একিলিস যখন ট্রয়ের গেট বেয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করছিল তখন ট্রয়ের রাজপুত্র Paris ( হেলেনের অপহরণকারী ) পেছন থেকে বিষ মাখানো তির নিক্ষেপ করে একিলিসের পায়ের গোডালিতে ।এক্ষেত্রে পরামর্শ দাতা দেবতা অ্যাপোলো । একিলিসের ওপর একটা অভিশাপও ছিল । অভিশাপ দিয়েছিল ট্রোজান বীর হেক্টর ।যোদ্ধা হিসেবে সে একিলিসের চেয়ে কোন অংশে কম না । তবু তাকে একিলিসের হাতে নিহত হতে হয় । কারণ অন্যায় যুদ্ধ এবং দেবতার ছলনা । ঠিকক যেন কর্ণার্জুনের চির দ্বন্দ্ব ! মৃত্যুর সময় হেক্টর একিলিসকে অভিশাপ দেয : বীরের মৃত্যু তার কপালে জুটবে ন। এক শোচনীয় পরিণতি তার জন্য অপেক্ষা করছে !
অর্জুন কর্ণকে পরাজিত ও হত্যা করলেও ইতিহাস ও জনতা কর্ণের পক্ষে । যুগ যুগ ধরে সকল মানুষের সহানুভূতি তার দিকে । ঠিকক তেমনি হোমার বর্ণিত ইলিয়াড মহাকাব্যে একিলিসের হাতে মরেও হেক্টর অমর ! সে চিরদিনের হিরো । ইংরেজি অভিধানে হেক্টরের মানে লেখা আছে: talk in a bullying way --অর্থাৎ রণংদেহী মূর্তিতে হেক্টর চ্যালেন্জ দিয় চলেছে - কার আছে হিম্মত লডবি আমার সাথে !
বলা বাহুল্য ,হেক্টরের চ্যালেন্জ গ্রহণ করার মতো কোন একিলিস কোথাও নেই ! অন্যায়ের কালিমা তাকে বিস্মৃতির অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছে ।
শব্দের মন মাতানো ইতিহাস-জগন্নাথের রথ
ইদানীং আমি শব্দের মজাদার জন্মও সংশ্লিষ্ট কাহিনি/ইতিহাস প্রতি উইক এন্ডে লিখে ফেসবুকের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে আনন্দ লাভের চেষ্টা করি । এবারে যতবার মন:সংযোগের চেষ্টা করি , ততবারই বেশ কয়েকটি বাংলা টি ভি চ্যানেল বাগডা দিচ্ছে ।গত দেড দু সপ্তাহ ধরে লাগাতার বিজ্ঞাপন দেখিয়ে চলেছে - এবারের রথযাত্রায় তাদের চ্যানেল যেমন লাইভ কভারেজ ও এ্যাংকারিং করবে তেমনটা আর কেউ দেখাতে পারবে না । রাগে আমার গা মাথা রি রি করে । শেষে ঠিক করলাম এ সংখ্যায় রথ যাত্রা নিয়েই লিখব ।
যে কোন ইংরেজি অভিধানে "Juggernaut"কথাটা আছে । এটা যে সাহেবি কায়দায় জগন্নাথ লেখা তা কাউকে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই । কিন্তু যা নজর এডিয়ে যায় তা হচ্ছে ঐ সাহেবি বানানের মধ্যে"রথ" ও ঢুকে আছে । কথাটা যে কল্পিত নয় তা দেখাবার জন্য অভিধান থেকে quote করছি : Juggernaut- origin- Sanskrit- Lord of the World referring to an image of Hindu god Krishna carried on a heavy chariot
এখানেই যদি সাহেবরা থামত,তাহলে আরমাথা ঘামাতে হ'ত না । Advanced English Learners' Dictionaryতে আছে cause or belief to which persons are sacrificed or to which they sacrificed themselves - এই কথাগুলো তো রীতিমতো ভাবিয়ে তোলে । রথের মেলায় ভিডে পদপিষ্ট হয়ে ধর্মান্ধ ভক্তদের কেউ কেউ আগেও মরত ,এখনও মরে । কিন্তু ডিকশনারিতেতো সাধারণ stampede বা পদপিষ্ট হয়ে মরারকথা বলছে না । ভাবতে ভাবতে রবীন্দ্রনাথের" কালের যাত্রা"নাটকের কথা মনে পডল। সেখানে কবি দেখিয়েছেন , আগে শূদ্রদের রথের রশি ছুঁতে দেওয়া হ'ত না । রজ্জুবদ্ধ গরুর মতো রথেরপেছন পেছন টেনে নিয়ে যাওয়া হ'ত । কখনও আবার তাদের ওপর দিয়ে রথের চাকা চালিয়ে দেওয়া হ'ত । এরকম একটা নিষ্ঠুর সামাজিক কুপ্রথা না থাকলে সাহেবরা গল্প বানিয়ে অভিধানে অন্তত লিখতে যেত না । Juggernaut এর আধুনিক প্রয়োগে শুধু নির্মম চলন ও দলন বোঝায় ।
নাটকের শুরুতে দেখা যাচ্ছে সকলের মাথায় হাত ! আয়োজন সম্পূর্ণ কিন্তু রথের দডি নডানোই যাচ্ছে না । পণ্ডিতেরা তকালেন মন্ত্রীর দিকে, মন্ত্রীমশাই ডাকলেন সৈনিক ও শেঠদের । কোন ফল হ'ল না । মেয়েরা উপোসকরে নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দিল , তবুও দডি অনড !তবে কি কোন অঘটন ঘটবে ?রথ কি এবারে চলবেই না ? এমন সময় বাঁধ ভাঙ্গা ঢেউএর মতো গর্জন করে শূদ্রেরা আসতে লাগল দলে দলে । শাস্ত্রকাররা তাকালেন সৈনিকদের দিকে । সৈনিকরা তাকাল মন্ত্রীমশাই এর দিকে । বুদ্ধিমান মন্ত্রী মৌন রইলেন । তিনি জানেন ,বৈপ্লবিক কিছু একটা ঘটতে চলেছে - এখন তলোয়ারবাজি চলে না ।
ইতিমধ্যে শূদ্ররা এসে গেছে । তারা বলল, রথ চলবে না মানে ? আমরাই চলাব রথ । আমরা জমি চষে ঘরে ঘরে খাবারের যোগান দিই , বস্ত্র বুনি, রাস্তা বানাই ,জঙ্গল ,ময়লা সব সাফ করি , নদী ,নালা, সমুদ্র ঘেঁটে মাছ ধরি , খনি থেকে তুলে আনি জ্বালানি আরো কত কি !আমরাই তো সংসারের চাকা সচল রাখি । আমরা পারব না রথ চালাতে !মূহুর্তের মধ্যে সশব্দে বিশাল রথ রাজপথে এসে পৌঁছল ।এক এক করে ইচ্ছুক অনিচ্ছুক সকলেরই হাত দডি চেপে ধরল ।আনন্দের বন্যা বয়ে গেল চারদিকে ।
আমরা গত কিস্তিতে note থেকে notorious হয়ে ওঠার করুণ কাহিনি দেখেছিলাম । আজ আমরা villain শব্দটা তুলে নিলাম । নাটক ও সিনেমার দৌলতে এই শব্দটার সঙ্গে আমরা ভীষণভাবে পরিচিত । ভিলেনরা আমাদের প্রিয় নায়ক নায়িকার জীবন দুর্বিষহ করে তোলে ।
সাধারণত ভিলেনরা কোন না কোন motive দ্বারা প্ররোচিত হয়ে শয়তান সুলভ ক্রিয়াকলাপগুলো চালিয়ে যায় । কিন্তু সব সময় যে Villainy-র জন্য মোটিভ থাকতেই হবে তেমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই । যেমন ওথেলো নাটকের ইয়াগো চরিত্র । তার সমস্ত শয়তানি সম্পূর্ণভাবে শয়তানির খাতিরেই করা ।
খলনায়কদের বিপক্ষে এতো কথা বললেও এটা কিন্তু মানতেই হবে যে তাদের ছাডা কাহিনি জমে না । কেমন যেন পানসে লাগে !
যাহোক, আমাদের আলোচ্য বিষয় নাটক বা সিনেমা নয় ,villain- এর বিবর্তন কাহিনি । গোডাতে তার মধ্যে গ্রাম্য সরলতা ছিল । sophistication বা corruption-এর চিহ্নমাত্র ছিল না । থাকবেই বা কেমন করে ? তার কাজ ছিল villa-তে । আরো নির্দিষ্ট করে বলা যায় - villa সংলগ্ন farmhouse-এ। এখানে একটা কথা বলতে হয় - যে কোন বাডিকে কিন্তু ভিলা বলা ঠিকক না । আমরা শহরের মধ্যেও কোন কোন বাডির নেমপ্লেটে ভিলা কথাটা দেখতে পাই । কিন্তু ভিলা যেখানকার শব্দ - সেই ইউরোপিয় দেশগুলোতে villa অর্থে শহরের কোলাহল থেকে দূরে নির্জন , নিরালা গ্রামদেশের বিশাল আয়তনের বাডিকে বোঝায় । শব্দটার নাডি বাঁধা ল্যাটিনের সঙ্গে ।প্রাচীন ফরাসি ভাষায় এর অপভ্রংশ- villein - সেখান থেকে villain .
এই বিবর্তনপ্রক্রিয়ায় শারীরিক পরিবর্তনের চেয়ে চরিত্রগত পরিবর্তন বেশি ব্যাপক । গ্রাম্য সরলতা ও নির্মলতার এই ভয়ংকর পরিণতির কথা গালে হাত দিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে আসে- What a fall !
দুর্যোধন তখন একখণ্ড লজ্জানিবারনী বস্ত্র নিম্নাঙ্গে জডিয়ে মায়ের সামনে এল । মা চোখের বাঁধন খুলে তাকানো মাত্র বস্ত্রাবৃত জায়গাটুকু ছাডা দুর্যোধনের বাকি শরীর লৌহ- কঠিন হয়ে গেল । কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে । পরের ঘটনা আমাদের সবার জানা । গদা যুদ্ধে ভীমের চেয়ে বেশি দক্ষতার অধিকারী হয়েও সে পরাজিত হল । কারণ যুদ্ধটা হয়েছিল নিয়ম অমান্য করে , শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে ।
একিলিসের ক্ষেত্রেও তার মা পুত্রকে অজেয় করার জন্য তাকে নিয়ে গেলেন পাতালপুরীতে । সেখানে বয়ে চলেছে Styx নদী ।ঐ নদীর জল নাকি পূত পবিত্র। তাতে অবগাহন করালে শত্রুপক্ষের কোন অস্ত্র জাতককে ঘায়েল করতে পারবে না । মা দুহাতে ছেলের গোডালি শক্ত করে ধরে নদীর জলে নিমজ্জিত করে উঠিয়ে আনলেন ।একিলিসের শরীর দুর্ভেদ্য হল বটে ,কিন্তু মাতৃদেবী যে অংশটুকু চেপে ধরেছিলেন সেই অংশ বাদে !
এবারে হেলেনের অপহরণকে কেন্দ্র করে গ্রিক আর ট্রোজানদের মধ্যে যুদ্ধের আয়োজন সম্পূণ। একিলিস যখন ট্রয়ের গেট বেয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করছিল তখন ট্রয়ের রাজপুত্র Paris ( হেলেনের অপহরণকারী ) পেছন থেকে বিষ মাখানো তির নিক্ষেপ করে একিলিসের পায়ের গোডালিতে ।এক্ষেত্রে পরামর্শ দাতা দেবতা অ্যাপোলো । একিলিসের ওপর একটা অভিশাপও ছিল । অভিশাপ দিয়েছিল ট্রোজান বীর হেক্টর ।যোদ্ধা হিসেবে সে একিলিসের চেয়ে কোন অংশে কম না । তবু তাকে একিলিসের হাতে নিহত হতে হয় । কারণ অন্যায় যুদ্ধ এবং দেবতার ছলনা । ঠিকক যেন কর্ণার্জুনের চির দ্বন্দ্ব ! মৃত্যুর সময় হেক্টর একিলিসকে অভিশাপ দেয : বীরের মৃত্যু তার কপালে জুটবে ন। এক শোচনীয় পরিণতি তার জন্য অপেক্ষা করছে !
অর্জুন কর্ণকে পরাজিত ও হত্যা করলেও ইতিহাস ও জনতা কর্ণের পক্ষে । যুগ যুগ ধরে সকল মানুষের সহানুভূতি তার দিকে । ঠিকক তেমনি হোমার বর্ণিত ইলিয়াড মহাকাব্যে একিলিসের হাতে মরেও হেক্টর অমর ! সে চিরদিনের হিরো । ইংরেজি অভিধানে হেক্টরের মানে লেখা আছে: talk in a bullying way --অর্থাৎ রণংদেহী মূর্তিতে হেক্টর চ্যালেন্জ দিয় চলেছে - কার আছে হিম্মত লডবি আমার সাথে !
বলা বাহুল্য ,হেক্টরের চ্যালেন্জ গ্রহণ করার মতো কোন একিলিস কোথাও নেই ! অন্যায়ের কালিমা তাকে বিস্মৃতির অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছে ।
শব্দের মন মাতানো ইতিহাস-জগন্নাথের রথ
ইদানীং আমি শব্দের মজাদার জন্মও সংশ্লিষ্ট কাহিনি/ইতিহাস প্রতি উইক এন্ডে লিখে ফেসবুকের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে আনন্দ লাভের চেষ্টা করি । এবারে যতবার মন:সংযোগের চেষ্টা করি , ততবারই বেশ কয়েকটি বাংলা টি ভি চ্যানেল বাগডা দিচ্ছে ।গত দেড দু সপ্তাহ ধরে লাগাতার বিজ্ঞাপন দেখিয়ে চলেছে - এবারের রথযাত্রায় তাদের চ্যানেল যেমন লাইভ কভারেজ ও এ্যাংকারিং করবে তেমনটা আর কেউ দেখাতে পারবে না । রাগে আমার গা মাথা রি রি করে । শেষে ঠিক করলাম এ সংখ্যায় রথ যাত্রা নিয়েই লিখব ।
যে কোন ইংরেজি অভিধানে "Juggernaut"কথাটা আছে । এটা যে সাহেবি কায়দায় জগন্নাথ লেখা তা কাউকে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই । কিন্তু যা নজর এডিয়ে যায় তা হচ্ছে ঐ সাহেবি বানানের মধ্যে"রথ" ও ঢুকে আছে । কথাটা যে কল্পিত নয় তা দেখাবার জন্য অভিধান থেকে quote করছি : Juggernaut- origin- Sanskrit- Lord of the World referring to an image of Hindu god Krishna carried on a heavy chariot
এখানেই যদি সাহেবরা থামত,তাহলে আরমাথা ঘামাতে হ'ত না । Advanced English Learners' Dictionaryতে আছে cause or belief to which persons are sacrificed or to which they sacrificed themselves - এই কথাগুলো তো রীতিমতো ভাবিয়ে তোলে । রথের মেলায় ভিডে পদপিষ্ট হয়ে ধর্মান্ধ ভক্তদের কেউ কেউ আগেও মরত ,এখনও মরে । কিন্তু ডিকশনারিতেতো সাধারণ stampede বা পদপিষ্ট হয়ে মরারকথা বলছে না । ভাবতে ভাবতে রবীন্দ্রনাথের" কালের যাত্রা"নাটকের কথা মনে পডল। সেখানে কবি দেখিয়েছেন , আগে শূদ্রদের রথের রশি ছুঁতে দেওয়া হ'ত না । রজ্জুবদ্ধ গরুর মতো রথেরপেছন পেছন টেনে নিয়ে যাওয়া হ'ত । কখনও আবার তাদের ওপর দিয়ে রথের চাকা চালিয়ে দেওয়া হ'ত । এরকম একটা নিষ্ঠুর সামাজিক কুপ্রথা না থাকলে সাহেবরা গল্প বানিয়ে অভিধানে অন্তত লিখতে যেত না । Juggernaut এর আধুনিক প্রয়োগে শুধু নির্মম চলন ও দলন বোঝায় ।
নাটকের শুরুতে দেখা যাচ্ছে সকলের মাথায় হাত ! আয়োজন সম্পূর্ণ কিন্তু রথের দডি নডানোই যাচ্ছে না । পণ্ডিতেরা তকালেন মন্ত্রীর দিকে, মন্ত্রীমশাই ডাকলেন সৈনিক ও শেঠদের । কোন ফল হ'ল না । মেয়েরা উপোসকরে নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দিল , তবুও দডি অনড !তবে কি কোন অঘটন ঘটবে ?রথ কি এবারে চলবেই না ? এমন সময় বাঁধ ভাঙ্গা ঢেউএর মতো গর্জন করে শূদ্রেরা আসতে লাগল দলে দলে । শাস্ত্রকাররা তাকালেন সৈনিকদের দিকে । সৈনিকরা তাকাল মন্ত্রীমশাই এর দিকে । বুদ্ধিমান মন্ত্রী মৌন রইলেন । তিনি জানেন ,বৈপ্লবিক কিছু একটা ঘটতে চলেছে - এখন তলোয়ারবাজি চলে না ।
ইতিমধ্যে শূদ্ররা এসে গেছে । তারা বলল, রথ চলবে না মানে ? আমরাই চলাব রথ । আমরা জমি চষে ঘরে ঘরে খাবারের যোগান দিই , বস্ত্র বুনি, রাস্তা বানাই ,জঙ্গল ,ময়লা সব সাফ করি , নদী ,নালা, সমুদ্র ঘেঁটে মাছ ধরি , খনি থেকে তুলে আনি জ্বালানি আরো কত কি !আমরাই তো সংসারের চাকা সচল রাখি । আমরা পারব না রথ চালাতে !মূহুর্তের মধ্যে সশব্দে বিশাল রথ রাজপথে এসে পৌঁছল ।এক এক করে ইচ্ছুক অনিচ্ছুক সকলেরই হাত দডি চেপে ধরল ।আনন্দের বন্যা বয়ে গেল চারদিকে ।
আমরা গত কিস্তিতে note থেকে notorious হয়ে ওঠার করুণ কাহিনি দেখেছিলাম । আজ আমরা villain শব্দটা তুলে নিলাম । নাটক ও সিনেমার দৌলতে এই শব্দটার সঙ্গে আমরা ভীষণভাবে পরিচিত । ভিলেনরা আমাদের প্রিয় নায়ক নায়িকার জীবন দুর্বিষহ করে তোলে ।
সাধারণত ভিলেনরা কোন না কোন motive দ্বারা প্ররোচিত হয়ে শয়তান সুলভ ক্রিয়াকলাপগুলো চালিয়ে যায় । কিন্তু সব সময় যে Villainy-র জন্য মোটিভ থাকতেই হবে তেমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই । যেমন ওথেলো নাটকের ইয়াগো চরিত্র । তার সমস্ত শয়তানি সম্পূর্ণভাবে শয়তানির খাতিরেই করা ।
খলনায়কদের বিপক্ষে এতো কথা বললেও এটা কিন্তু মানতেই হবে যে তাদের ছাডা কাহিনি জমে না । কেমন যেন পানসে লাগে !
যাহোক, আমাদের আলোচ্য বিষয় নাটক বা সিনেমা নয় ,villain- এর বিবর্তন কাহিনি । গোডাতে তার মধ্যে গ্রাম্য সরলতা ছিল । sophistication বা corruption-এর চিহ্নমাত্র ছিল না । থাকবেই বা কেমন করে ? তার কাজ ছিল villa-তে । আরো নির্দিষ্ট করে বলা যায় - villa সংলগ্ন farmhouse-এ। এখানে একটা কথা বলতে হয় - যে কোন বাডিকে কিন্তু ভিলা বলা ঠিকক না । আমরা শহরের মধ্যেও কোন কোন বাডির নেমপ্লেটে ভিলা কথাটা দেখতে পাই । কিন্তু ভিলা যেখানকার শব্দ - সেই ইউরোপিয় দেশগুলোতে villa অর্থে শহরের কোলাহল থেকে দূরে নির্জন , নিরালা গ্রামদেশের বিশাল আয়তনের বাডিকে বোঝায় । শব্দটার নাডি বাঁধা ল্যাটিনের সঙ্গে ।প্রাচীন ফরাসি ভাষায় এর অপভ্রংশ- villein - সেখান থেকে villain .
এই বিবর্তনপ্রক্রিয়ায় শারীরিক পরিবর্তনের চেয়ে চরিত্রগত পরিবর্তন বেশি ব্যাপক । গ্রাম্য সরলতা ও নির্মলতার এই ভয়ংকর পরিণতির কথা গালে হাত দিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে আসে- What a fall !
Comments
Post a Comment